চোখে আঘাত পেলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেন

 

চোখ খুব সংবেদনশীল ও নরম একটি অঙ্গ। বাইরের আঘাত থেকে নিরাপদ রাখার জন্য শক্ত হাড়নির্মিত চক্ষুকোটরে এর অবস্থান। কিন্তু দেখার জন্য সামনের দিকটি খোলা। আর এটিই চোখকে আঘাতপ্রবণ করে রেখেছে; যদিও চোখের পাতা এটিকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টায় থাকে।

নানাভাবে চোখে আঘাত লাগতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় খেলাধুলার সামগ্রী, যেমন ব্যাডমিন্টনের কর্ক লেগে, ওয়েল্ডিং বা গ্রিন্ডিং মেশিনে কাজ করার সময় পাথর বা লোহার কণা ছিটকে এসে; পড়াশোনার সামগ্রী, যেমন পেনসিল, স্কেল, কম্পাস ইত্যাদির আঘাতে ও দুর্ঘটনায়। সম্প্রতি ছররা গুলিতে অনেকেই চোখে আঘাত পেয়েছেন। স্প্লিন্টারজনিত চোখের আঘাতও নেহাত কম নয়।

চোখে আঘাত পেলে তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করুন:

১. চোখের সুরক্ষা:

  • চোখের চাপ কমানো: চোখের উপর কোনো চাপ দেবেন না। এ কারণে চোখের ক্ষতি হতে পারে।
  • চোখের ওপরে কোনো পদার্থ বা ধ্বংসাত্মক কিছু পড়েছে কিনা চেক করুন।

২. প্রথমিক চিকিৎসা:

  • পানি দিয়ে ধোয়া: যদি কোনো ধুলো, কেমিক্যাল বা অন্য কিছু চোখে ঢুকে থাকে, তাহলে পরিষ্কার পানিতে চোখ ধোয়া উচিত। গাঢ় বা গরম পানি ব্যবহার করবেন না। চোখ খুলে রাখুন এবং ধীরে ধীরে পানি দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা করুন।
  • চোখে কোনো কিছু ঢুকে গেলে: চোখকে জোর করে ঘষবেন না বা আঘাত করবেন না। সম্ভব হলে, চোখের একপাশে পানি দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা করুন, অথবা চোখের দিকে কিছু চোখের পাতায় দিয়ে পানি দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা করুন।

৩. চোখের উপর কোনো কিছু পড়ে গেলে:

  • চোখে কনট্যাক্ট লেন্স থাকলে: কনট্যাক্ট লেন্স সরিয়ে ফেলুন এবং চোখ ভালোভাবে ধোয়ার চেষ্টা করুন।

৪. চোখে আঘাতের পর:

  • চোখে কোনো ফোঁড়া বা বড় আঘাত হলে: চোখের উপরে সোজা কোনো কাপড় রাখুন, যাতে চাপ কমে এবং আঘাত লাগা অংশ শীতল থাকে।
  • আঘাতের পর গুরুতর লক্ষণ: যদি আঘাতের পর চোখে রক্তপাত, দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন, অত্যধিক ব্যথা, চোখের আকারে পরিবর্তন, বা চোখের বাইরে কোনো কিছু ফোলাভাব লক্ষ্য করেন, তাহলে তাত্ক্ষণিকভাবে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

৫. ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ:

  • উচ্চতর চিকিত্সা প্রয়োজন: যদি চোখের অবস্থার উন্নতি না হয় বা গুরুতর সমস্যা মনে হয়, দ্রুত চোখের ডাক্তার (অফথ্যালমোলজিস্ট) বা জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শন করুন।

৬. নিরাপত্তা পদক্ষেপ:

  • মোড়ক বা গ্লাস পরিধান করুন: ভবিষ্যতে চোখের আঘাত থেকে রক্ষা পেতে নিরাপত্তা গগলস বা অন্যান্য সুরক্ষামূলক গিয়ার ব্যবহার করুন।

চোখ একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, তাই চোখের আঘাতের ক্ষেত্রে দ্রুত এবং সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


Next Post Previous Post